খোয়াজ পাখি |
খোয়াজ পাখি, অতি পরিচিত নামেই আমাদের দেশে পরিচিত, এটি এক প্রকার পানিকপাখি যা বিজ্ঞানসম্মত নাম 'Recurvirostra avosetta' দ্বারা উল্লেখ করা হয়। ied avocet নামে পরিচিত এই প্রজাতির পাখি বিশ্বজুড়ে বনাম সাগরতীর তথা বিলুপ্ত হয়ে যেতে থাকা জলাভূমির সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খোয়াজ পাখি দীর্ঘায়ত পা এবং উপরের দিকে বেঁকে থাকা ঠোঁটের জন্য বিশেষ পরিচিত। ঠোঁটটির এই বাঁকা গঠন তাদের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য, যা পানি থেকে খাদ্য সংগ্রহে সহায়ক। সাধারণত এরা কর্দমাক্ত স্থান থেকে অনুবীক্ষণীয় প্রাণী যেমন প্ল্যাঙ্কটন, জলজ পোকামাকড় ইত্যাদি সংগ্রহ করে জীজনারণ্যে নিয়োজিত থাকে।
খোয়াজ পাখির বাসস্থান প্রধানত ইউরোপ, কেন্দ্রীয় এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত। তবে জলাভূমির বিপন্নতা এবং আবাসস্থানের পরিবর্তনের কারণে এদের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমের কারণে ied avocet প্রজাতির এই পাখি বিলুপ্তির পথে থাকায় সংরক্ষণ কার্যক্রমে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
খোয়াজ পাখিদের প্রজনন সময় সাধারণত বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে হয়। এরা জলাভূমির কাছাকাছি নির্জন স্থানে বাসা বাঁধে এবং প্রায় এক মাসের মতো ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটে ছানা বের হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছানারা নিজেদের খাবার সংগ্রহে সফল হয়।
বাংলাদেশে এই পাখি বিশেষ করে সুন্দরবন ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা যায়। এদের উপস্থিতি স্থানীয় পরিবেশের স্বাস্থ্য সম্পর্কে তথ্য বহন করে, তারা এমন পরিবেশে বাস করে যা পানির গুণমান এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে নির্দেশিকা প্রদান করে। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় খোয়াজ পাখির ভূমিকা অপরিসীম।
খোয়াজ পাখি নিরন্তর আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে বিশিষ্ট জীববৈজ্ঞানিকদের মধ্যে, কারণ এদের স্বাভাবিক আচার-আচরণ এবং প্রজনন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা পরিবেশবিজ্ঞানে নতুন ভুমি প্রদান করেছে। পরিবেশগত শিক্ষার ক্ষেত্রেও খোয়াজ পাখিদকে কেন্দ্র করে উদ্যমী চর্চা চলছে যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে প্রকৃতির প্রতি গভীর মমত্ববোধ এবং সম্মান সৃষ্টি করতে উদ্বুদ্ধ করছে।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও স্থানীয় পানিকর্দে জীববৈচিত্র্যের সমৃদ্ধিতে খোয়াজ পাখির স্থান অনস্বীকার্য। সুতরাং তাদের সংরক্ষণ এবং সুরক্ষা অনিবার্য একটি দায়িত্ব, যা বিশ্বব্যাপী পরিবেশ সংরক্ষণবাদীদের হৃদয়ে উচ্চারিত হচ্ছে। সংরক্ষণ কার্যক্রমে স্থানীয় মানুষদের সম্পৃক্ত করা হলে এ ধরনের প্রজাতিগুলোর টিকে থাকা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
Post a Comment