মস্তিষ্কের বয়স বেড়ে যায় কেন, জানেন?

 


সামনে পরীক্ষা, সিলেবাস এখনো অনেকটা বাকি কিংবা অফিসের কোনো বড় কাজ, পরদিনই ডেডলাইন। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে অস্ফুটে একটা বাক্য বেরিয়ে আসে আমাদের মুখ দিয়ে—‘সমস্যা নেই, সারা রাত জেগে কাভার করে ফেলব।’ সারা রাত জেগে পড়াশোনা করা বা অফিসের কাজ শেষ করা অনেকের কাছেই স্বাভাবিক ব্যাপার।

ফ্রিল্যান্সিং ও রিমোট জবের দুনিয়ায় রাত জেগে কাজ করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে কারও কারও বেলায়। কিন্তু নিয়মিত রাত জাগা মানুষের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে নতুন একটা গবেষণাপত্রে। জার্নাল অব নিউরোসায়েন্সের গবেষকদের মতে, এক রাত জেগে কাজ করা মস্তিষ্কের বয়স প্রায় কয়েক বছর বাড়িয়ে দেয়!

জার্নাল অব নিউরোসায়েন্সের গবেষকদের অধীনে ১৯ থেকে ৩৯ বছর বয়সী মোট ১৩৪ জন নারী-পুরুষকে রাখা হয়েছিল নিবিড় পরিচর্যায়। সেখানে তাঁদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এই ফলাফল পেয়েছেন গবেষকেরা। নিয়মিত ঘুমের সমস্যায় ভোগেন কিংবা কাজের কারণে রাতে ঘুমানো সম্ভব হয় না, এমন ব্যক্তিদের এমআরআই স্ক্যানের সঙ্গে নিয়মিত ভালো ঘুম হয়, এমন কিছু ব্যক্তির এমআরআইয়ের তুলনা করে নির্ণয় করা হয়েছে এ তথ্য।


গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে না ঘুমানো ব্যক্তির ব্রেইনওয়েভের আচরণ নিয়মিত ঘুমানো বয়সী ব্যক্তির ব্রেইনওয়েভের মতো। অর্থাৎ রাত জেগে কাজ করার প্রভাব পরে মস্তিষ্কের তরঙ্গে। যে কারণে বয়সে ছোট হওয়ার পরও রাতে না ঘুমানো মস্তিষ্ককে করে তুলতে পারে বয়সীদের মতো। জার্মান গবেষক ইভা-মারিয়া এলমেনহর্স্টের মতে, ‘ঘুমহীনতা ব্রেইনওয়েভকে অনেকটাই পরিবর্তন করে দেয়। যাতে তরুণ মস্তিষ্কও অনেকটা বয়সীদের মস্তিষ্কের মতো আচরণ করতে শুরু করে।’


মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা লিখে শেষ করা যাবে না। মানুষের চিন্তাভাবনা ও স্মৃতিশক্তিতে বড় ভূমিকা পালন করে ঘুম। আর সেই বিশ্রামের সঙ্গে শরীরের ভেতরে ও বাইরের প্রতিটি অঙ্গ নিজেদের পুনরুজ্জীবিত করে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নতুন দিনের জন্য তৈরি করে শরীরকে।

তবে আশার কথা হচ্ছে, এই পরিবর্তন একেবারে পাকাপাকি নয়। বরং নিয়মিত ঘুম ও শরীরের যত্ন নিলে এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব। কারণ, ঘুমের মধ্য দিয়ে আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত নিউরনগুলো বিশ্রাম পায়। ফলে এরাও আগের মতো কর্মক্ষমতা ফিরে পায়।

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post