বউ কথা কও' |
'বউ কথা কও' অর্থাৎ 'Indian Cuckoo' পাখিটি আমাদের জীববৈচিত্র্যের একটি অমূল্য অঙ্গ। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পাখি পাওয়া যায়। প্রধানত গ্রীষ্মকালে এই পাখি তার প্রজনন কার্যক্রম চালায় এবং তার উচ্চস্বরে কোকিল বলতে কোকিল নামকরনের ভিত্তি হিসেবে পরিচিতি পায়।
'বউ কথা কও পাখির বৈজ্ঞানিক নাম 'Cuculus micropterus'। এটি সাধারনত গ্রীষ্মকালে ভারতে আসে এবং প্রজনন ঋতুতে সক্রিয় থাকে। এই পাখিটি একটি পরোক্ষ প্রজনন কৌশল ব্যবহার করে, যা পরিচিত 'ব্রুড প্যারাসিটিজ্ম' নামে। সাধারণত এটি অন্য পাখির বাসায় ডিম পাড়ে এবং ঐ পাখিরা তাদের সন্তানরূপে তাদের পরিচর্যা করে থাকে।
'বউ কথা কও পাখির গড় আকার প্রায় ৩০-৩৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং এদের পালক সাধারণত ধূসর বা বাদামি রঙের হয়। পুরুষ পাখির ডানা ও লেজ গাঢ় রঙের হয়, মোকল তাদের গোল্ডেন হলুদ চোখ দ্বারা চিহ্নিত করা যায়।
এই পাখিটির প্রধান খাদ্য হল পোকা-মাকড়, বিশেষত শুঁয়োপোকা। এছাড়া এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ছোট মাকড়সা, ফড়িং ও অন্যান্য ছোট পোকামাকড়। এরা সাধারনত একাকী বা জোড়ায় থাকে এবং খাদ্য সংগ্রহ কালে ভিন্ন ভিন্ন গাছে উড়ে বেড়ায়।
ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিতে 'বউ কথা কও' পাখির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই পাখির ডাক কালের প্রভাব প্রতিফলিত করে। প্রথাগতভাবে এরা গ্রামের নারীদের বিভিন্ন গোপনীয় বার্তা আদান প্রদান করতে ব্যবহার করত, যা ধ্বনির মাধ্যমে প্রচার করত।
'বউ কথা কও পাখি বিভিন্ন ধরণের পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে এবং উপযুক্ত পরিবেশ চেয়ে নেয়। না পাওয়া জয়াগায় এরা দক্ষভাবে টিকে থাকে। তবে, বনের কাটা-ছাঁটা এবং মানুষের খোঁজা-খুঁজিতে এদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যাপক সচেতনতার মাধ্যমে 'বউ কথা কও পাখির প্রজনন ও বংশধারাকে সুরক্ষা প্রদানের গুরুত্ব অনেক। এই পাখির ধারাবাহিকতা ও অবদান যেভাবে আমাদের প্রকৃতির সমৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে রয়েছে, সেভাবে যেন আমাদের সম্মানের সাথেই বিবেচনা করা হয়।
Post a Comment