নিম গাছ |
নিম গাছ, বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta indica, একটি বহুল পরিচিত গাছ যার ঔষধি গুণাগুণ যুগ যুগ ধরে স্বীকৃত। নিম মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় পাওয়া যায়, তবে বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি চাষ করা হয়। নিম গাছের প্রতি অংশের ঔষধি গুরুত্ব রয়েছে পাতা, ছাল, বীজ, এবং তেলের প্রয়োজনীয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
নিম গাছের পাতা প্রাচীনকাল থেকে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিভিন্ন চর্মরোগ, যেমন একজিমা এবং ফুসকা, নিম পাতার রসের মাধ্যমে উপশম হয়। এছাড়াও নিম পাতা চিবিয়ে খাওয়ার মধ্যে দিয়ে মুখের যন্ত্রণা এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করা যায়। নিমের তেলও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ; এটি পোকামাকড় প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয় এবং ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে।
নিম গাছের ছালও ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর ছাল থেকে প্রাপ্ত রস জীবাণুঘ্ন এবং প্রদাহ-বিরোধী গুণাগুণের কারণে ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। করোনা মহামারীর সময়ও নিম পাতার রস এবং অন্যান্য অংশগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নিমের বীজ থেকে প্রাপ্ত তেল কৃষিক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় থেকে রক্ষা করে। পরিবেশবান্ধব সব কৃষির ক্ষেত্রে এর ব্যাপক চাহিদা দেখা যাচ্ছে।
নিম গাছের আরও একটি প্রাসঙ্গিক দিক হলো এর পরিবেশগত সুবিধা। এটি বাতাস থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে এবং বায়ু পরিশুদ্ধ করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব কমাতে সহায়ক।
নিম গাছের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের প্রমাণ হিসেবে এটিকে অনেকে "গ্রামীণ ফার্মেসি" হিসেবেও অভিহিত করেন। নিম গাছের সামগ্রিক উপযোগিতা এবং এর প্রাকৃতিক ঔষধি গুণাগুণ একে নিঃসন্দেহে একটি অনন্য উদ্ভিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নিম গাছ মানুষের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশের সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা একে বিশেষভাবে মর্যাদার আসনে বসায়।
Post a Comment