উট পাখির বৈশিষ্ট্য কী? উট পাখি কোন-কোন দেশে বা অঞ্চলে পাওয়া যায়?

 

ইংরেজি নাম Ostrich


উট পাখি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাখি। কিন্তু পাখি হলেও, এই উট পাখি উড়তে অক্ষম। এই পাখি আগে এশিয়াতেও দেখতে পাওয়া যেতো। চিড়িয়া খানাতে গেলে এর দেখা মেলে। প্রাকৃতিকভাবে এদের দেখা পাওয়া যায় আফ্রিকার বন্য অঞ্চলে। সাভানা আর সাহেল অঞ্চলেই বেশি দেখা মেলে এদের। এদের সর্বোচ্চ ওজন প্রায় ১৮০ কেজির মত হয়।

উটপাখির সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্র হলো এদের পা। পা গুলো ১০-১৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। উটপাখির পায়ের আঘাতে মানুষ মারাও যায়। এমনকি সিংহকেও কুপোকাত করার ক্ষমতা রাখে। রাগান্বিত অবস্থায় একটা উটপাখি ঘন্টায় ৭২.৫ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে।


উটপাখির তিনটা পাকস্থলী রয়েছে। যা তাদের অন্যান্য পাখি থেকে আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। উটপাখির যেহেতু দাঁত নেই, তাই সে সরাসরি খাবার গিলে ফেলে। খাবার গুলো হজম করার জন্য উটপাখি সাথে কিছু পাথর ও গিলে নেয়। এ পাথর গুলো পাকস্থলী তে গিয়ে খাদ্য হজমে সাহায্য করে। মানে পাথর গুলো গ্রাইন্ডার এর কাজ করে থাকে।

( এই পাথরগুলি একটি উটপাখির পাকস্থলী থেকে পাওয়া)


পুরুষ উটপাখি সাদা-কালো রঙের হয়ে থাকে। আর মেয়ে উটপাখি গুলো বাদামী রঙের হয়।
উটপাখি বন্য পরিবেশে প্রায় চল্লিশ বছর বেচে থাকে। পুরুষ উটপাখি সিংহের মত আওয়াজ করতে পারে আবার হিস হিস করেও আওয়াজ করে।
উটপাখির ঘুম কে "স্লো ওয়েভ স্লিপ" বলা হয়। তারা যখন খুব ক্লান্ত থাকে তখন, এক জায়াগায় সোজাভাবে দাড়িয়ে, চোখ মেলে, ঘাড় সোজা রেখে ঘুমায়। কিন্তু তারা ঘুমের মধ্যেও খুব সজাগ থাকে।
উটপাখির ডিম হল পৃথিবীর সব চেয়ে বড় ডিম। একটা ডিমের ওজন হয় প্রায় দেড় কেজির মত, যা ২৪ টা মুরগীর ডিমের সমান। উটপাখির একটা ডিম ২২০ কেজি পর্যন্ত ওজন সহ্য করতে পারে। ভাবুন একবার এদের ডিমের খোলস কি পরিমাণ শক্ত।

উট পাখির বৈশিষ্ট্যঃ
১।    উড়তে পারে না তবু এরা পাখি
২।    উড়তে না পারলেও দারুণ জোরে ছুটতে পারে
৩।    বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাখি হচ্ছে এই উটপাখি
৪।    ওড়ার ক্ষমতাহীন এই পাখিদের দৌড়ের গতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটারের মতো
৫।    এদের উচ্চতা প্রায় ৩ মিটার
৬।    দেহের ওজন ১৫০ কেজিরও বেশি হতে পারে
৭।    আর রয়েছে বিশাল বিশাল পাখা
৮।    পুরোটা মেলে ধরলে এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ ফুট
৯।    এই বড় বড় পাখার জন্যই তো এরা উড়তে না পারলেও পাখি
১০।    পুরুষ উটপাখির পাখার রঙ হয় কালো, এর সঙ্গে থাকে সাদা লেজ
১১।    মেয়ে উটপাখির পাখার রঙ হয় ধূসর বাদামী
১২।    উটপাখির উড়তে না পারার কারণ এদের শরীরের ওজন অনেক বেশি
১৩।    এত বেশি ওজন নিয়ে ওড়ার মতো শক্তি তাদের ওই বড় পাখাতেও নেই
১৪।    উটপাখির প্রধান খাদ্য হল বিভিন্ন শস্যদানা, কোনো কোনো সময় অবশ্য এরা পোকামাকড়ও খেয়ে থাকে
১৫।    মজার ব্যাপার হল, অন্য পাখির মতো এদেরও দাঁত নেই
১৬।    তাই খাবার খাওয়ার সময় এরা কিছু পাথর খেয়ে নেয়, এই পাথর এদের পাকস্থলীতে খাদ্যদানা হজম করতে পেষার কাজটি করে
১৭।    একটি পূর্ণাঙ্গ উটপাখি পাকস্থলীতে ১ কেজি পাথর খেয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে
১৮।    উটপাখির আকৃতির মতোই এর ডিমও অনেক বড়
১৯।    উটপাখির ডিমই পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ডিম
২০।    একেকটা ডিমের ওজন হয়ে থাকে ১.৫ কেজি
২১।    অন্য কোনো প্রাণী আর এত বড় ডিম পাড়ে না
২২।    উটপাখির এই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে সময় লাগে ৩৫ থেকে ৪০ দিন
২৩।    দেখতে অনেক বড়সড় হলেও উটপাখিরা কিন্তু মোটেও হিংস্র স্বভাবের নয়
২৪।    বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশের চিড়িয়াখানায় উটপাখি দেখতে পাওয়া যায়
২৫।    ভীষণ জোরে ছুটতে পারার ক্ষমতার জন্য এদের দৌড় প্রতিযোগিতাও হয়
২৬।    এই প্রতিযোগিতা দর্শনার্থীদের কাছে হয়ে ওঠে দারুণ আনন্দময়
২৭।    এই পাখির নাম উটপাখি, তাদের দেখতে অনেকটাই উটের মতো

 প্রাপ্তিস্থানঃ

১।    উটপাখি সাধারণত আফ্রিকায় পাওয়া যায়
২।    এছাড়া সাহারা মরুভুমির উত্তর ও দক্ষীণ ভুমিতে বাস করে
৩।    এশিয়া মাইনরে বসতি গড়েছে
৪।    আফ্রিকার উত্তর ও দক্ষীণের savananns এবং Sahel জনপদে
৫।    অস্ট্রেলিয়ার উটপাখী বসতি স্থাপন করেছে
৬।    আরবীয় উটপাখী দল গঠন করেছে

৭।    এমনকি ২৫,০০০ বছর আগে, ভারতের রাজথ্বান, গুজরাঠ ও মধ্যপ্রদেশও নাকি উটপাখি পাওয়ার জীনগত ৯২% প্রমাণ প্রত্নতাত্বিক দপ্তরে মিলেছে।

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post