অমুসলিমের রক্ত কোনো মুসলমানের দেহে প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়তে কোনো বাধা নেই। কেননা, মুশরিকরা বিশ্বাসগত দিক দিয়ে অপবিত্র। (সুরা তাওবা, আয়াত : ২৮)
তবে শারীরিক দিক দিয়ে তারা অপবিত্র নয়। এ ছাড়া অমুসলিমদের রক্ত দান করতেও কোনো বাধা নেই; বরং মানুষ হিসেবে মুসলিম-অমুসলিম তথা সব মানুষের প্রতি উদার সহযোগিতা ইসলামের শিক্ষা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক তাজাপ্রাণ রক্ষায় সওয়াব আছে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩৬৩)
আর স্বাভাবিকভাবে একে অন্যকে রক্ত দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ। আল্লামা মুহাম্মদ শফি (রহ.) লিখেছেন, ‘রক্ত মানব দেহের অংশবিশেষ। দেহ থেকে নির্গত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নাপাক হয়ে যায়। আর নাপাক বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই কারণে এবং সৃষ্টির সেরা জীব মানব অঙ্গের মর্যাদার কথা বিবেচনা করে স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তদান নিষিদ্ধ হওয়ার কথা। তবে অস্বাভাবিক অবস্থায় বিশেষত চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইসলাম যেহেতু কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করেছে, তাই বিশেষ বিবেচনায় রক্তদানকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর কারণ হলো, রক্তের দেহান্তর ও অঙ্গান্তরে কোনো রকম কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না; বরং ইনজেকশনের মাধ্যমে খুব সহজেই তা দেহ থেকে দেহে স্থানান্তর করা যায়। যেভাবে কাটা-ছেঁড়া ছাড়া মায়ের দুধ শিশুর দেহে স্থানান্তরিত হয়ে শিশুর দৈহিক বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। আর শিশুকে দুগ্ধপান করানো শুধু বৈধ নয়; বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যকীয়ও বটে। তা ছাড়া রক্তদান করলেও প্রাকৃতিকভাবে দেহের মধ্যে নতুন রক্তের সঞ্চার করে থাকে। অতএব, যখন কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে, অন্যের রক্ত ছাড়া রুগ্ণ ব্যক্তির জীবন-মরণ সংকট সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে তাকে রক্তদান করা বৈধ। তবে রক্ত বিক্রয় করা কোনো অবস্থায়ই বৈধ নয়।’ (জাওয়াহিরুল ফিকহ)।
Post a Comment